বরিশাল শস্যের দেশ নামে পরিচিত। তবে পেয়ারা বা শস্য ছাড়াও এ অঞ্চলের খ্যাতি আছে ফলের জন্য। বিভাগের ভোল জেলায় বিভিন্ন ধরনের ফসল ফলে। এবার সেখানে দেখা গেল তরমুজের সমাহার। তরমুজ ঝুলে আছে মাচায়, রসাল, ডোরাকাটা। খেতে গিয়ে দেখা যায় চারদিকে উঁচু মাটির ঢাল। সেই ঢালের খেতে তরমুজ ঝুলে আছে মাচায় মাচায়।
ভোলার সদর উপজেলার চরমনষা গ্রামে সবুজবাংলা কৃষি খামারে েএরকম তরমুজ দেখা গেছে সম্প্রতি।
বাহারি রঙের তরমুজগুলো মাচায় ঝুলে ছিল
ডোরাকাটা দাগ, কোনোটি কালচে সবুজ, ফ্যাকাশে সবুজে ইত্যাদি বিভিন্ন রকমের তরমুজ।
তরমুজগুলোর ভেতরে রয়েছে টকটকে লাল, কিংবা হলুদাভ কমলা রঙের শাসালো অংশ।
সবুজ বাংলা কৃষি খামারের পরিচালক ইয়ানুর রহমান চলতি বছর জেলার শ্রেষ্ঠ কৃষকের পুরস্কার পেয়েছেন।
পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ পড়েই ইয়ানুর রহমান ভোলায় বারোমাসি ফল তরমুজের আবাদের কথা জানতে পারেন।
সেকারণে এ বছরের শুরুতে আশ্বিন মাসে পরীক্ষামূলকভাবে ৫০ শতাংশ জমিতে বেবি তরমুজের আবাদ করেন।
এতে তার ফলনও খুব ভালো হয়েছে বলে জানান তিনি।
ইয়ানুর রহমান হিসাব করে বলেন, ৫০ শতাংশ জমিতে ৩ হাজার গাছ লাগিয়েছেন।
সেখান থেকে প্রায় ১২ হাজার ফল পেয়েছেন।
ফল আরও বেশি হলেও তিনি অনেক ফল ছেঁটে ফেলে দিয়েছেন।
তরমুজ চাষে তাঁর প্রায় ৬০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।
তিনি আশা করেন কমপক্ষে আড়াই লাখ টাকায় তরমুজ বিক্রি হবে।
বাঁধের ঢালে দেখা যায় সমান্তরাল করে তৈরি করা হয়েছে লম্বা বেড।
বেডের ওপর এক হাত পরপর তরমুজের চারা লাগানো হয়েছে।
খেতের দিকে বেডের সামনে মাচা দিয়েছেন তিনি।
ইয়ানুর জানান যে মোট ছয় জাতের তরমুজের বীজ লাগানো হয়েছে এই বেডে।
চরমনষার কৃষকেরা অসময়ে খেতের মাচায় তরমুজ ঝুলতে দেখে ভীষণ অবাক হয়ে গেছেন ।
ভোলার বাজারে অসময়ে বেবি তরমুজ প্রথমে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
বর্তমানে সেটা ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এসব তরমুজ বাজারে আনার সাথে সাথেই বিক্রি হয়ে যায়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয়ের উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর।
তিনি বলেন, কৃষি খাতে এক অনন্য সংযোজন বারোমাসি বেবি তরমুজ।
আগে বিদেশ থেকে এ জাতের তরমুজ আমদানি করা হতো।
বর্তমানে এ তরমুজ এখন দেশেই উৎপাদিত হচ্ছে।
কম জমিতে এ ফল আবাদ করে অল্প সময়ে ফলন পাওয়া যায়।
ভোলা সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. রিয়াজ উদ্দিন।
তিনি বলেন, জলাবদ্ধতা নেই, পানি জমে না এমন উঁচু জমিতে এই তরমুজ চাষ করতে হবে।
তবেই এ তরমুজ চাষে সফলতা আসবে।