টিএসপি সার ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে মাঠপর্যায়ে কৃষকদের। আবার এই সার আমদানি করা হচ্ছে কৃষকদের চাহিদা অনুযায়ী ভর্তুকি দিয়ে। এতে কৃষকেরা সময়মতো সার পাচ্ছেন না। শুধু আমদানিকারকদের লাভ হচ্ছে। তাই তাঁদের এই সার কিনতে হচ্ছে খোলাবাজার থেকে বেশি দামে। যার মানে দাড়ায় ব্যবসায়ীদের পকেটে সরকারের ভর্তুকির টাকা যাচ্ছে।
সময়মতো সার পাচ্ছেনা কৃষকরা
বিদেশ থেকে সারের জাহাজ বন্দরে পৌঁছালে নীতিমালা অনুযায়ী তা পরিদর্শন করে বরাদ্দ দেওয়া হবে।
সংশ্লিষ্ট কৃষি কর্মকর্তারা সার পরিবেশকদের (ডিলারদের) কাছে পৌঁছার পরে তার আগমনী বার্তা মন্ত্রণালয়ে পাঠাবেন।
রাজশাহী জেলায় গত ২৩ সেপ্টেম্বর ১ হাজার ২৪৫ মেট্রিক টন টিএসপি সার বরাদ্দ করা হয়েছে অক্টোবর মাসে বিতরণের জন্য।
ওই সার সরবরাহের দায়িত্ব পেয়েছে বেসরকারি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান নোয়াপাড়া ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল।
কিন্তু ১৯ অক্টোবরের আগে এই সার রাজশাহীতে পৌঁছায়ইনি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, তারা ১৯ অক্টোবর ১৫৮ মেট্রিক টন ও ২১ অক্টোবর আরও ২০ মেট্রিক টন টিএসপি সার পেয়েছে।
রাজশাহীর আগাম আলুচাষিরা অন্যদিকে হাপিত্যেশ করছেন এই সারের জন্য।
এ ব্যাপারে নোয়াপাড়া ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী সাইদুর রহমানের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হয়।
কিন্তু মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তাঁর ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
কৃষিসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান যে, রবিশস্যের বীজ বপনের সময়কাল ১৬ অক্টোবর থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত।
মূলত অ-ইউরিয়া সারের ব্যবহার এই সময়টাতেই করা হয়।
ইউরিয়া সার ব্যবহার করা হয় চারা গজানোর পর।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা জানান, টিএসপি সার ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করছে সরকার।
এ জন্য চাষিদের ব্যবহার করতে বলা হচ্ছে ডিএপি সার।
কৃত্রিম সার সংকটের অভিযোগ কৃষকদের
যদিও সারের কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হচ্ছে বলে কৃষকদের অভিযোগ।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কে জে এম আবদুল আওয়াল।
তিনি স্বীকার করেন, তাঁরা ঝামেলায় আছেন টিএসপি নিয়ে।
তিনি বলেন, সরকার কিছুটা নিরুৎসাহিত করছে টিএসপি সারের ব্যবহার।
যার পরিবর্তে ব্যবহার করতে বলা হচ্ছে ডিএপি সার।
কোথাও বেশি দামে এই সার বিক্রির খবর পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।
যশোরের অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া দেশে সারের সবচেয়ে বড় বিপণনকেন্দ্র।
সব ধরনের সার বেশি দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে গত এক সপ্তাহ নওয়াপাড়া ঘুরে।
অভিযোগ আছে, এখানকার ব্যবসায়ীরা আমদানিকারকদের কাছ থেকে সার কিনে অন্য জেলার ব্যবসায়ীদের কাছে বেশি দামে বিক্রি করছেন।
ফলে রবি মৌসুমে স্থানীয় কৃষকদের চলতি বেশি দামে সার কিনতে হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, কৃষক পর্যায়ে সার ব্যবহারে সরকার ভর্তুকি দিয়ে আসছে সরকার ২০০৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে।
সুষমকরণ, উৎপাদন বৃদ্ধি ও ব্যয় কমাতে অ-ইউরিয়া সারে ভর্তুকি প্রদান করা হচ্ছে।
সরকার সরাসরি বিদেশ থেকে অ-ইউরিয়া সার আমদানি করে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের মাধ্যমে।
চাহিদা অনুযায়ী কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে বেসরকারিভাবে আমদানি করা সার বরাদ্দ দেওয়া হয়।