ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদে দুশ্চিন্তায় খুলনার চাষিরা, আশঙ্কা করছেন বড় ধরনের ক্ষতির। সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে দুই দিন ধরে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে খুলনায়। এতে কৃষকেরা জমিতে থাকা পাকা ধান নিয়ে ভীষণ দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে কৃষি অধিদপ্তর ধানের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছে।
খুলনায় শনিবার দুপুর থেকেই গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাত শুরু হয়।
থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে গতকাল রোববার দুপুর পর্যন্ত।
তবে একটানা বৃষ্টি হয় দুপুরের পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
আবারও আজ সোমবার সকাল থেকেই শুরু হয়েছে থেমে থেমে বৃষ্টি।
বৃষ্টিপাত দুপুর দেড়টা পর্যন্ত অব্যাহত ছিল বলে জানা গেছে।
ঘন মেঘপুঞ্জ সৃষ্টি হয়েছে জাওয়াদের প্রভাবে
খুলনা আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ মো. আমিরুল আজাদ।
তিনি বলেন, জাওয়াদের কারণে লঘুচাপের সৃষ্টি হয়েছে।
তার প্রভাবে ঘন মেঘপুঞ্জ সৃষ্টি হয়েছে।
যার ফলে হালকা থেকে মাঝারি ধরণের বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
তবে তিনি আশা করেন যে আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে আবহাওয়ার উন্নতি হবে।
আগামীকাল সকাল থেকে সূর্যের দেখা মিলতে পারে বলে আশাবাদ প্রকাশ করেছেন এই আবহাওয়াবিদ।
আবহাওয়া অফিস সূত্র বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় খুলনায় বৃষ্টি হয়েছে ২৫ মিলিমিটার।
অন্যদিকে ১৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে আজ সকাল ছয়টা থেকে নয়টা পর্যন্ত।
খুলনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, এ বছর আমন ধান রোপন করা হয়েছিল খুলনায় ৯৩ হাজার ১২৫ হেক্টর জমিতে।
এর মধ্যে ধান কাটা হয়েছে মাত্র ২৫ শতাংশ।
প্রায় ৩০ শতাংশ ধান বর্তমানে পেকে গেছে।
আর বাকি ধান গুলোতে কেবল শিষ আসতে শুরু করেছে।
বটিয়াঘাটার গঙ্গারামপুর গ্রামের কৃষক দেবপ্রসাদ সরকার।
তিনি এবার আট বিঘা জমিতে আমন ধানের চাষ করেছেন।
তিনি বলেন, এবার আমনের ফলন ভালো হয়েছিল।
কিন্তু গত দুই দিন ধরে টানা বর্ষণ দেখে সব কৃষকের হাসি মলিন হতে শুরু করেছে।
তিনি জানান যে ইতিমধ্যে তাঁর ২০ ভাগ ধান ক্ষতির মুখে পড়েছে।
বৃষ্টির সঙ্গে থাকা দমকা বাতাসের দরুন তাঁর হেলে পড়েছে খেতের সব ধানগাছ।
দাকোপের কামারখোলা গ্রামের কৃষক টুটুল ইসলাম।
তিনি বলেন, আমন মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টির ধান লাগাতে দেরি হয়েছে।
তবে তুলনামূলক ভাবে অনেক ভালো ধান হয়েছিল।
ধান কাটার সময় আসতেই আবার বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলো।
এখন তিনি সন্দেহ প্রকাশ করেন কতটুকু ধান ঘরে তুলতে পারবেন সেটি নিয়ে।
খুলনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান।
তিনি বলেন, অসময়ের এই বৃষ্টি সবাইকে চিন্তিত করে তুলেছে।
বৃষ্টির কারণে আক্রমণ হতে পারে ধানের শিষকাটা পোকার।
এ ছাড়া পরবর্তী ফসল উৎপাদনও বাধাগ্রস্ত হবে জমিতে পানি জমে থাকায়।