
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, “চাষিরা মাছ বড় করতে পারেন, কিন্তু মাছ সৃষ্টি করতে পারেন না। প্রকৃতির এই সম্পদ সংরক্ষণে মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের ভূমিকা বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। অথচ বর্তমানে অনেক চাষি বাঁওড়ে অতিরিক্ত রাসায়নিক কিংবা কখনো বিষ প্রয়োগ করছেন, যা পরিবেশ ও দেশীয় মাছের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।”
মঙ্গলবার (২৭ মে) দুপুরে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলা অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় স্থানীয় জেলে ও মৎস্যজীবীদের অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো।
ফরিদা আখতার আরও বলেন, “হাওর-বাঁওড়ের মালিকানা ভূমি মন্ত্রণালয়ের হাতে। তারা যখন ইজারা দেয়, তখন আমাদের মৎস্যখাতের জন্য অনুরোধ করতে হয়। আমাদের বলতে হয়—‘একটু সুযোগ দিন, একটু সময় দিন সিদ্ধান্ত নেওয়ার।’ এরপরও আমি আপনাদের পাশে আছি। ‘জাল যাঁর, জলা তাঁর’—এই প্রাচীন প্রবাদটিকে আমাদের ধরে রাখতে হবে।”
তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন, “এখানে এসে আমি যেটুকু দেখলাম, শুনলাম, তা সংশ্লিষ্ট উচ্চপর্যায়ে পৌঁছে দেব। প্রয়োজনে যাদের সঙ্গে কথা বলা দরকার, আমি তাদের সঙ্গে কথা বলব।”
সভায় সভাপতিত্ব করেন ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়াল। বিশেষ অতিথি ছিলেন মৎস্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ড. আবু নঈম মুহাম্মদ আবদুছ ছবুর, অভ্যন্তরীণ মৎস্য শাখার কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোতালেব হোসেন, বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতির সভাপতি মো. ফজলুর রহমান এবং ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার মঞ্জুর মোরশেদ।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন কোটচাঁদপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, পৌর বিএনপির সভাপতি এস কে এম সালাহ উদ্দিন বুলবুল সিডল, জামায়াতে ইসলামী কোটচাঁদপুর উপজেলা আমির তাজুল, নাগরিক কমিটির সভাপতি শরিফুজ্জামান আগা খান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হৃদয় আহসান এবং হালদার সম্প্রদায়ের সদস্য সুনিল হালদার, স্বপন হালদার ও কমলা হালদার।
সব বক্তার বক্তব্যেই উঠে আসে একটি অভিন্ন দাবি—বাঁওড় হারিয়ে মৎস্যজীবীদের জীবন-জীবিকা আজ সংকটে। বাঁওড় ব্যবস্থাপনায় সুষ্ঠু নীতিমালা এবং স্থানীয় মৎস্যজীবীদের অধিকার রক্ষার বিষয়ে জোর দেন তারা।
মতবিনিময় সভার আগে ফরিদা আখতার বলুহর বাঁওড় পরিদর্শন করেন এবং বাঁওড় ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।