মাজরা পোকা নিয়ন্ত্রণে এসেছে এখন। কিন্তু ঝিনাদহের আমন ধানের ক্ষেতগুলোতে এবার কৃষকদের ভোগাচ্ছে কারেন্ট পোকা, যা বাদামি গাছফড়িং নামেও পরিচিত। ধান পাকার শেষ মুহূর্তে এই বিপত্তিতে তাদের দিন কাটছে বড় লোকসানের আশঙ্কায়। কীটনাশকেও প্রতিকার মিলছে না এমনটাই কৃষকদের অভিযোগ। আর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, তাদের কর্মীরা পোকা দমনে মাঠে নেমেছেন।
কৃষকরা জানান, ক্ষেতে মাজরা পোকার উপদ্রব দেখা দেয় চারা রোপণের কয়েক দিনের মাথায়।
সে সময় নানা ধরনের কীটনাশক তারা ব্যবহার করেছেন ঠিকই তবে কাজ হয়নি।
এরপর কয়েক দিন টানা বৃষ্টি হবার কারণে এর উপদ্রব কমে আসে।
অক্টোবরে ধান পাকতে শুরু করলে বাদামি গাছফড়িং বা কারেন্ট পোকার উপদ্রব দেখা দেয়।
শৈলকুপার উত্তর মির্জাপুর গ্রামের কৃষক রুহুল শেখ।
তিনি বলেন, এবার তিন বিঘা জমিতে ধানের আবাদ করেছেন তিনি।
অনেক চারা মাজরা পোকার উপদ্রবে নষ্ট হয়েছে।
এবার যখন ধান পাকতে শুরু করেছে ঠিক তখনই হল কারেন্ট পোকার উপদ্রব শুরু।
কোন ওষুধেও কাজ হচ্ছে না বলে জানান এই চাষি।
সদর উপজেলার গোয়ালপাড়া গ্রামের কৃষক আবেদ আলী।
তিনি বলেন, কৃষি বিভাগের লোকজন মাঝেমধ্যে এসে কীটনাশক দেয়ার পরামর্শ দেন।
কিন্তু তাদের পরামর্শ মতো কীটনাশক প্রয়োগ করলেও কাজ হয় না।
মাঝখান থেকে কেবল কীটনাশকের জন্য গুনতে হয় বাড়তি টাকা।
ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আজগর আলী।
তিনি জানান যে, এ বছর ৬ উপজেলায় ১ লাখ ৪ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে।
তিনি আরও বলেন যে, জেলার বিভিন্ন এলাকায় কারেন্ট পোকার উপদ্রব বেড়েছে।
অধিদপ্তরের লোকজনকে কয়েকটি দলে ভাগ করে দিয়েছেন বলে তিনি জানান।
তারা পোকা নিধনে নিয়মিত ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
পোকায় অনেকের খুব ক্ষতি হয়েছে।
তবে সার্বিকভাবে ঠিক কী পরিমাণ জমি পোকায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা তিনি নির্দিষ্টভাবে জানাতে পারেননি।
কৃষি তথ্য সার্ভিস এর তথ্য অনুসারে ২০০৩ সালে ধানের জন্য ক্ষতিকর হিসেবে ২৬৬ প্রজাতির পোকাকে শনাক্ত করা হয়।
যার মধ্যে অন্যতম মাজরা, পামরি, বাদামি গাছফড়িং বা কারেন্ট পোকা।
এগুলো ধানের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে।
এবার মৌসুমের শুরুতেই কৃষকরা মাজরা পোকার আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
সে রেশ কাটতে না কাটতেই এখন কারেন্ট পোকা বা বাদামী গাছফড়িং পোকার উপদ্রব শুরু হয়েছে।