Sunday, 12 October, 2025

আলুর দর পড়ে গেছে, হতাশ কৃষক ও ব্যাবসায়ীরা


ঠাকুরগাঁও জেলায় আলুর দর পড়ে গেছে বাজারগুলোতে। প্রায় প্রতিদিনই পাল্লা দিয়ে কমছে আলুর দাম। প্রতি কেজি আলুতে জাতভেদে সাত-আট টাকা পর্যন্ত লোকসান গুনতে হচ্ছে কৃষকদের। যার কারণে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা হিমাগার থেকে আলু বের করা নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন। কৃষকেরা জানাচ্ছেন যে, বিগত ১০ বছরের মধ্যে তাঁরা আলুতে ৬ বছরই লোকসান দিয়েছেন। এর মধ্যে তিন বছরে পুঁজি পর্যন্ত ফেরত আনতে পারেননি অনেকে।

আলু চাষের জন্য বিখ্যাত জেলা ঠাকুরগাঁও। বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা এখান থেকে আলু কিনে নিয়ে যান প্রতিবছর। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রমতে, জেলায় ২৫ হাজার ৩৫ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছিল ২০২০ সালে। এখান থেকে মোট আলু উৎপাদন এর পরিমাণ ছিল ৬ লাখ ৭২০ মেট্রিক টন। বাজারে আলুর দাম বেড়ে যাওয়ায় সেবার কৃষক ও ব্যবসায়ীরা ব্যাপক লাভ করেন। লাভের আশায় কৃষক আলু চাষে ঝুঁকে পড়েন। চলতি বছর ২৮ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ করেছেন কৃষকেরা, যাতে ফলন পেয়েছেন ৬ লাখ ৯৮ হাজার ৬১৭ মেট্রিক টন।

আলুর দর পড়ে গেছে

আরো পড়ুন
বাংলাদেশে ভেনামি চিংড়ি চাষ: সম্ভাবনা, চ্যালেঞ্জ ও করণীয়
বাংলাদেশের ভেনামি চিংড়ি

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে চিংড়ি শিল্প একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে পোশাক শিল্পের পরেই স্থান করে নিয়েছে। তবে Read more

নিরাপদ মাছ উৎপাদনে আসছে ‘জাতীয় মৎস্য নীতি ২০২৫

দেশের প্রোটিনের চাহিদা পূরণে এবং জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় মৎস্য অধিদপ্তর ‘জাতীয় মৎস্য নীতি ২০২৫’ এর খসড়া তৈরি করেছে। এই নতুন নীতিমালার Read more

আলু সংরক্ষণের জন্য জেলায় সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ১৫টি হিমাগার রয়েছে। এসব হিমাগারের আলু সংরক্ষণ করা যায় ১ লাখ ২৮ হাজার মেট্রিক টন। অর্থাৎ কৃষকের উৎপাদিত অধিকাংশ পরিমাণ আলু সংরক্ষণের বাইরে থেকে যায়। অন্যদিকে করোনাকালে হোটেল রেস্টুরেন্ট বন্ধ থাকায় আলুর চাহিদা কমে েগেছে।

বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা গেছে, ৫০-৬০ শতাংশ আলু হিমাগার থেকে বের হয়ে যাবার কথা থাকলেও চাহিদার অভাবে এখন পর্যন্ত ২৫ শতাংশ আলুও হিমাগার থেকে বের হয়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দুই সপ্তাহের ব্যবধানে গড়ে ১০০ টাকা দাম কমেছে প্রতি বস্তা আলুতে।

ঠাকুরগাঁও ডেইরি লিমিটেডের চেয়ারম্যান নুরুল হুদা জানান, আলুর সঙ্গে আলুচাষি, ব্যবসায়ী ও হিমাগার কর্তৃপক্ষ সম্পৃক্ত। তিনি পরামর্শ দেন চাষিদের লোকসান থেকে বাঁচাতে আলুভিত্তিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার দিকে নজর দিতে হবে।

জেলা হিমাগার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আবদুল্লাহ বলেন, সারা দেশেই এবার হিমাগারগুলোতে আলু পড়ে আছে। আলুর বাজারমূল্যের বিপর্যয় ঠেকাতে প্রক্রিয়াজাত কারখানার সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে। একইসাথে  আলু রপ্তানির উদ্যোগ এবং সরকারি-বেসরকারি ত্রাণ কার্যক্রমে আলু যুক্ত করতে হবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবু হোসেন জানান, এবার আলুর পাশাপাশি সবজিরও রেকর্ড উৎপাদন হবার কারনে হিমাগারে সংরক্ষণ করা আলুর চাহিদা কমেছে।

0 comments on “আলুর দর পড়ে গেছে, হতাশ কৃষক ও ব্যাবসায়ীরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক লেখা

আর্কাইভ