Saturday, 22 November, 2025

সেচ সংকট ও খরা পশু খাদ্য উৎপাদনে বাধা সৃষ্টি করছে


সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে সেচ সংকট এবং খরার কারণে পশু খাদ্য উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। আবহাওয়ার অস্বাভাবিক পরিবর্তনের ফলে দেশের অনেক অঞ্চলেই বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে গেছে, যা কৃষিক্ষেত্রে এক বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে পশুখাদ্যের উপর, বিশেষ করে ঘাস, খড় এবং অন্যান্য শস্যের উৎপাদনে।

খাদ্য সংকট ও দুগ্ধ উৎপাদন হ্রাস

পশু খাদ্যের মূল উৎস হলো সবুজ ঘাস, ভুট্টা, এবং বিভিন্ন ধরনের শস্য। কিন্তু পর্যাপ্ত সেচের অভাবে এসব ফসল ফলানো কঠিন হয়ে পড়েছে। নদী-নালা, খাল-বিলের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় অনেক কৃষকই সেচের জন্য প্রয়োজনীয় পানি পাচ্ছেন না। ফলে ঘাস চাষ ব্যাহত হচ্ছে, এবং খড় উৎপাদনও কমে যাচ্ছে। এর ফলে গবাদি পশুর জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। বিশেষ করে দুগ্ধ উৎপাদনকারী গাভীগুলোর জন্য পুষ্টিকর খাদ্যের অভাবে দুধের উৎপাদন অনেক কমে গেছে, যা স্থানীয় খামারিদের জন্য বড় লোকসানের কারণ হচ্ছে।

আরো পড়ুন
নবান্ন উৎসব ঘিরে বগুড়ার বাজারে নতুন আলু, দাম চড়া ৫০০ টাকা কেজি

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঐতিহ্যবাহী নবান্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে বগুড়ার বাজারগুলোতে উঠেছে নতুন আলু। উৎসবের আমেজে এই আলুর চাহিদা এখন তুঙ্গে। তবে Read more

কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: সময়সূচি প্রকাশ

২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে কৃষি গুচ্ছভুক্ত ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার সময়সূচি ঘোষণা করা হয়েছে। পরীক্ষার তারিখ: ২০২৬ সালের Read more

উচ্চমূল্য এবং খামারিদের দুশ্চিন্তা

পশুখাদ্যের সরবরাহ কমে যাওয়ায় বাজারে এর দাম আকাশচুম্বী হয়েছে। ভুট্টার গুঁড়ো, খৈল এবং অন্যান্য প্রক্রিয়াজাত খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় ছোট এবং মাঝারি খামারিরা আর্থিক সংকটে পড়ছেন। অনেক খামারি পর্যাপ্ত খাদ্য কিনতে না পেরে তাদের গবাদি পশুর সংখ্যা কমাতে বাধ্য হচ্ছেন। এর ফলে শুধু যে তাদের ব্যক্তিগত আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে তাই নয়, দেশের সামগ্রিক প্রাণিসম্পদ খাতেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

প্রতিকারের উপায়

এই সংকট মোকাবিলায় সরকারের পাশাপাশি ব্যক্তিগত উদ্যোগও জরুরি। খরাপ্রবণ এলাকায় সেচের আধুনিক পদ্ধতি যেমন ড্রিপ ইরিগেশন বা স্প্রিংকলার ইরিগেশন ব্যবহার করা যেতে পারে। এছাড়া, স্বল্প-পানিতে জন্মায় এমন ঘাস বা শস্য চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করা যেতে পারে। সরকারিভাবে গভীর নলকূপ স্থাপন, খাল খনন এবং পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা গেলে এই সমস্যা কিছুটা লাঘব হতে পারে। পাশাপাশি, পশুখাদ্যের বিকল্প উৎস যেমন সাইলেজ (ঘাস ও শস্য সংরক্ষণ পদ্ধতি) তৈরির বিষয়ে খামারিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া যেতে পারে।

এই সংকট নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে তা দেশের কৃষি ও প্রাণিসম্পদ খাতে দীর্ঘমেয়াদী নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

0 comments on “সেচ সংকট ও খরা পশু খাদ্য উৎপাদনে বাধা সৃষ্টি করছে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক লেখা

আর্কাইভ