
দেশীয় জাতের গবাদিপশুকে বিশ্বমানের পর্যায়ে উন্নীত করা সম্ভব, যদি উৎপাদনে যথাযথ সহায়তা এবং আধুনিক পদ্ধতির নিশ্চয়তা দেওয়া যায়। গতকাল মঙ্গলবার (১৭ জুন) সকালে সাভারের বিসিএস লাইভস্টক একাডেমিতে নবনির্মিত ডরমিটরি ভবন ‘হোয়াইট হল’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার এ কথা বলেন।
গবাদিপশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় গুরুত্বারোপ
ফরিদা আখতার বলেন, গবাদিপশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রয়োজনে পশুখাদ্যের গুণগত মান ও উপাদান নিয়ে গবেষণা আরও জোরদার করতে হবে। তিনি মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, নতুন এই ডরমিটরি ভবন ও মনোরম প্রশিক্ষণ পরিবেশ প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে, যার সুফল ভোগ করবেন দেশের খামারিরা। তিনি আরও উল্লেখ করেন, উপজেলা ও জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ও ভেটেরিনারি চিকিৎসকদের সচেতনতা এবং আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলেই এবছর কোরবানিতে অধিকাংশ গবাদিপশু সুস্থ ও সবল ছিল।
শিল্পভিত্তিক পশুপালনের নেতিবাচক দিক ও ভর্তুকির আহ্বান
উপদেষ্টা শিল্পভিত্তিক গবাদিপশু পালনের নেতিবাচক দিক তুলে ধরে বলেন, এভাবে পশুপালন চলতে থাকলে তা জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে এবং প্রান্তিক খামার ব্যবস্থার ওপর হুমকি সৃষ্টি করবে। তিনি বর্তমান খামার পদ্ধতিতে রোগ প্রতিরোধে কার্যকর টিকা উদ্ভাবন ও প্রয়োগের গুরুত্বও তুলে ধরেন। কৃষির মতো প্রাণিসম্পদ খাতেও ভর্তুকি দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এতে খামারিরা সরাসরি উপকৃত হবেন এবং এ বিষয়ে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে ইতোমধ্যে আলোচনা চলছে।

মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের নতুন উদ্যোগ ও তরুণ উদ্যোক্তা সৃষ্টি
ফরিদা আখতার জানান, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত ও শহীদ পরিবারের কল্যাণে একটি নতুন অধিদপ্তর গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়, যেখানে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়কেও যুক্ত করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, শুধু শহীদ ও আহতদের পরিবারের সদস্য নয়, তরুণদেরও উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে প্রাণিসম্পদ খাতের কর্মকর্তারা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেন।
পরিদর্শন ও অন্যান্য কার্যক্রম
অনুষ্ঠানের পর উপদেষ্টা কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামারের কার্যক্রম পরিদর্শন করেন এবং খামারের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেন। এরপর তিনি কেন্দ্রীয় কৃত্রিম প্রজনন ল্যাবরেটরিও ঘুরে দেখেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিতি
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিসিএস লাইভস্টক একাডেমির পরিচালক ডা. এ. কে. এম. হুমায়ুন কবীর, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. বেগম শামছুননাহার আহম্মদ ও মো. শাহজামান খান, এলডিডিপি প্রকল্পের চীফ টেকনিক্যাল কো-অর্ডিনেটর ড. মো. গোলাম রব্বানীসহ প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও বিসিএস লাইভস্টক অ্যাকাডেমির কর্মকর্তাবৃন্দ। প্রশিক্ষণার্থী হিসেবে বিসিএস লাইভস্টক ক্যাডারের ৩৩ ও ৪৩তম ব্যাচের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন এলডিডিপির প্রকল্প পরিচালক ডা. মো. জসিম উদ্দিন।