
জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার কৃষকরা বোরো ধান কাটার ঠিক আগ মুহূর্তে ভয়াবহ এক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছেন। স্থানীয়ভাবে ‘কারেন্ট পোকা’ নামে পরিচিত ব্রাউন প্ল্যান্ট হপার পোকা ব্যাপক হারে ধানে আক্রমণ চালিয়ে ধানক্ষেত ধ্বংস করে দিচ্ছে। পোকামার ওষুধ প্রয়োগ করেও কোনো ফল মিলছে না বলে অভিযোগ করেছেন কৃষকরা। বরং অনেক ক্ষেত্রেই ধানের গাছ আরও দ্রুত শুকিয়ে যাচ্ছে।
ক্ষেত থেকে দূর থেকে তাকালে মনে হচ্ছে ধান পেকে গেছে, কিন্তু কাছে গিয়ে দেখা যাচ্ছে বেশিরভাগ শীষ ফাঁপা, তাতে কোনো ধানই নেই। কৃষকরা জানান, পোকার আক্রমণের দুই-তিন দিনের মধ্যেই ধানের গাছ লালচে হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে।
মেলান্দহের ঘোষেরপাড়া ইউনিয়নের ছাবিলাপুর গ্রামে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, অনেক ক্ষেতেই ধানের গাছ পচে যেতে শুরু করেছে। ক্ষতির আশঙ্কায় অনেক কৃষক আগেভাগেই ধান কেটে নিচ্ছেন।
স্থানীয় কৃষক আনিস মণ্ডল বলেন, “চাষাবাদই আমার একমাত্র আয়ের উৎস। এই পোকা সবকিছু শেষ করে দিয়েছে। এখন পরিবার নিয়ে কীভাবে চলব, বুঝতে পারছি না।”
বাঁশিবেলতৈল গ্রামের কৃষক মানিক মিয়া বলেন, “ছয় বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি। সব জমিতেই কারেন্ট পোকা লেগেছে। ওষুধ দিয়েও কোনো লাভ হয়নি, উল্টো গাছ আরও শুকিয়ে গেছে।”
জামালপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক জাকিয়া সুলতানা বলেন, “যে পোকাটিকে কৃষকরা ‘কারেন্ট পোকা’ বলছেন, সেটি মূলত ব্রাউন প্ল্যান্ট হপার। এটি ধানের গোড়ার রস শুষে নেয়, ফলে গাছ শুকিয়ে যায়।”
তিনি আরও জানান, পোকা নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তারা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পরিদর্শন ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করছেন।
উল্লেখ্য, চলতি মৌসুমে মেলান্দহ উপজেলায় ২০ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। কৃষি বিভাগের আশঙ্কা, পোকা আক্রমণের ফলে এবার উৎপাদনে বড় ধরণের ক্ষতি হতে পারে।