Friday, 05 September, 2025

চিনা বাদাম চাষে বাম্পার ফলন


চিনা বাদাম

প্রেম ফল নামে বাদামের একটা সুনাম আছে, বন্ধু আড্ডা, কিংবা শরিরে উদ্ভিজ প্রোটিন চাহিদা পুরনে বাদামের বিকল্প নেই। বাদাম খাওয়ার উপকারিতা অনেক আছে তার মধ্যে হাড়ের উন্নতি ঘটে, বুদ্ধি বৃদ্ধি পায়, কান্সারের মত রোগ দুর হয়, পুষ্টির ঘাটতি দুর হয়, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়, ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রন করে, ওজন নিয়ন্ত্রনে চলে আসে, রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রন হয়, হজম ক্ষমতার বৃদ্ধি ও দেহের কোষের কার্যক্ষমতা বজায় রাখে। সেই বাদামের বাম্পার ফলন একটি সুখবর বটে।

বাদাম চাষে সফলতা ও স্বচ্ছলতা দুই ফিরলো চাষিদের। সোনালী ফসল তুলতে গিয়ে পার করছেন ব্যস্ত সময়। তবুও মুখে হাসি নেই, প্রকৃতির বিরূপতায় হাসি যেন মলিন । অনাবাদি পদ্মার চরে চাষ করেছেন চিনা বাদাম আর তাতে ফলন হয়েছে বাম্পার । কিন্তু সেই বাম্পার ফলন যে গত বছরের তুলনায় কম আয় দেবে, তাই বলছেন তারা।

কুষ্টিয়া অঞ্চলে পদ্মার চরে ঘুরে দেখা গেছে বাদামের চাষ। হিসাব অনুসারে এ বছর প্রায় একহাজার হেক্টর জমিতে বাদামের চাষ হয়েছে। তার মধ্যে ৮২০ হেক্টর জমি হল দৌলতপুর উপজেলায় জেগে ওঠা পদ্মার  বিস্তীর্ণ চরে । এই বালুচর একসময় খোলা পড়ে থাকতো । এই জেগে ওঠা চরে আর কোন চাষ হত না, সম্ভবও ছিল না । সেই বালুচরেই চাষীরা চিনা বাদাম চাষে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে । চিনা বাদামের বাম্পার ফলন হয়েছে। এর ফলে ধীরে ধীরে চাষের পরিমাণ বাড়তে থাকে ।

আরো পড়ুন
ভেনামী (Vannamei Shrimp) চিংড়ি চাষে পোষ্ট লার্ভা PL15 সাইজ নির্ধারণের গুরুত্ব

বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে চিংড়ি চাষ একটি গুরুত্বপূর্ণ আয়ের উৎস। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভ্যানামি / ভেনামি (Litopenaeus vannamei) চিংড়ি চাষের প্রতি আগ্রহ Read more

ক্ষুরা রোগ নিয়ন্ত্রণে করণীয়: খামারি ও কৃষকের জন্য জরুরি নির্দেশিকা

ক্ষুরা রোগ বা ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ (FMD) একটি অত্যন্ত সংক্রামক ভাইরাসজনিত রোগ, যা গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া ও শুকরের Read more

চিনা বাদাম
চিনা বাদাম

এবছরও চিনা বাদামের বাম্পার ফলন হয়েছে বলে জানিয়েছেন চাষীরা । তবে তাতে হতাশাও আছে । তাদের ধারণা এবার আমফানের প্রভাবে ফলনের ঘাটতি দেখা দিচ্ছে । ফলে যে হারে ফলন হবার কথা, সে হারে হয়তো ফলন হচ্ছে  না। যদিও খরচ বাদ দিয়ে লাভের মুখ দেখবেন বলে তারা জানিয়েছেন । দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর এলাকার বাদাম চাষী জানান, প্রায় ১০ বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করায় বিঘাপ্রতি তার খরচ হয়েছে প্রায় ৮ হাজার টাকা করে । সে অনুযায়ী বিঘাপ্রতি ফলন ৪-৬ মণ হারে হচ্ছে, যা বর্তমান বাজারদরে ২২০০ টাকা মণ হিসেবে বিক্রয় করে লাভ হবে, তবে তা বিগত বছরের তুলনায় কিছুটা কম হবে।

অন্যদিকে, বাদাম ক্ষেতের মজুররা অবশ্য বাদামের ক্ষেতের কাজ করে খুব খুশি । প্রতিদিন গাছ থেকে বাদাম ঝরিয়ে প্রায় ২০০-৩০০ টাকা করে আয় করছেন তারা । আবার দৌলতপুর কৃষি কর্মকর্তা জানিয়েছেন যে সরকারী প্রণোদনার পাশাপাশি রাজস্বখাতের অর্থায়নে প্রদর্শনী ও ফলোআপ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে চরাঞ্চলে সহযোগিতা করা হচ্ছে ।

সংশ্লিষ্টদের মতে চরাঞ্চলে এভাবে বাদামের চাষ পদ্ধতির উন্নতি করে যেসব জমি অনাবাদী সেগুলোতে অর্থকরী সোনালী ফসল বাদাম চাষের আওতায় আনা গেলে একদিকে আর্থিক চাহিদা মিটবে অন্যদিকে ক্ষতিকর তামাক চাষ কমে যাবে । তাই অর্থকরী এই ফসল চাষে কৃষকদের উদ্বু্দ্ধ করার পাশাপাশি তাদেরকে সকল ধরনের সহায়তা, ‍যন্ত্রপাতি ও প্রশিক্ষণ প্রদানের পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

0 comments on “চিনা বাদাম চাষে বাম্পার ফলন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক লেখা

আর্কাইভ