Friday, 22 November, 2024

সর্বাধিক পঠিত

আইপিআরএস ব্যবহারে মাছ চাষ, দেখা দিচ্ছে নতুন সম্ভাবনা


সারোয়ার হোসেন ইমন নাটোরের হোসেন অ্যান্ড অ্যাগ্রো খামারের স্বত্বাধিকারী এবং উদ্যোক্তা। শহরতলির জাঠিয়ান ভবানীপুর এলাকায় তার নিজের ১৪ বিঘা জমি রয়েছে। সেই জমিতে আইপিআরএস ব্যবহারে মাছ চাষ করেছেন তিনি। এবং আইপিআরএস ব্যবহারে মাছ চাষ করে মাছের খামার গড়ে তুলেছেন।

করোনাভাইরাস মহামারিতে সবাই ধরাশায়ী, আর তিনি পেয়েছেন নতুন সম্ভাবনা।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পদ্ধতি আইপিআরএস

আরো পড়ুন
মিঠা জাতের পান চাষে লাভবান কৃষক

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার ফুলের ঘাট এলাকার পান চাষের এই চিত্র সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক। পান চাষ একটি লাভজনক ফসল হওয়ায় এটি ক্রমশ Read more

দেশীয় পাট বীজ উৎপাদনে চমক দেখালেন কৃষক মুক্তার

ফরিদপুরের সালথা উপজেলার কৃষক মুক্তার হোসেন মোল্যা দেশীয় পাট বীজ উৎপাদনে উদ্ভাবনী সাফল্য দেখিয়েছেন। সালথা উপজেলা পাট উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত Read more

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইপিআরএস (ইনপন্ড রেসওয়ে সিস্টেম) পদ্ধতিতে মাছ চাষ করছেন তিনি।

সব ধরনের মাছ এ পদ্ধতিতে চাষ করা যায়।

তবে ইমন আপাতত রুই ও গ্লাসকার্প মাছ চাষ করছেন।

যন্ত্রপাতি বসানোসহ খামারে এ পর্যন্ত বিনিয়োগ ৭০ লাখ টাকা।

তিনি জানান এক বছরের মধ্যেই এই টাকা আয় করতে পারবেন বলে আশা করেন।

চীনে গিয়ে কয়েক দফা আইপিআরএস প্রযুক্তি দেখেন তিনি।

এতে তিনি উদ্বুদ্ধ হন।

এরপর গত বছরের শেষের দিকে চীন থেকে আইপিআরএস প্রযুক্তি আমদানি করেন।

এরপর গড়ে তোলেন মৎস্য খামার।

সব যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম চীনা প্রযুক্তিবিদ ও প্রকৌশলী স্থাপন করে দিয়ে যান।

আধুনিক এই পদ্ধতিতে একটি পুকুরে মাছ চাষ করা যায় একাধিক চেম্বার করে।

এতে উৎপাদন খরচ কম, তাছাড়া অল্প জায়গায় অধিক মাছ উৎপাদন সম্ভব।

এ ছাড়া এই আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে খাবার সরবরাহ ও সুষ্ঠুভাবে পরিচর্যা করা যায়।

এ পদ্ধতিতে অবশ্য মাছ খুব দ্রুত বেড়ে ওঠে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের পর ২য় প্রকল্প নাটোরে

চাঁপাইনবাবগঞ্জের পর তিনিই আইপিআরএস পদ্ধতিতে দ্বিতীয় প্রকল্প হিসেবে নাটোরে মাছ চাষ শুরু করেছেন।

অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে মাছ উৎপাদনে নতুন সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, তাই অন্য চাষিরা আগ্রহী হচ্ছেন।.

ইমন আরও জানান খামারে উৎপাদিত মাছ বিদেশেও রপ্তানির প্রক্রিয়া চলছে।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের প্রফেসর মাহফুজুল হক।

তিনি জানান, আইপিআরএস পদ্ধতিতে একটি পুকুরে একাধিক চেম্বার তৈরি করা হয়।

এতে সৃষ্টি করা হয় নদীর মতো কৃত্রিম স্রোত।

প্রতিটি চেম্বারে মাছের ঘনত্ব বেশি থাকে এবং স্রোতের কারণে মাছ দ্রুত বেড়ে ওঠে।

অন্য পদ্ধতির চেয়ে এ পদ্ধতিতে মাছ উৎপাদন করা যায় ১০ থেকে ১২ গুণ বেশি।

তুলনামূলক কম উৎপাদন খরচে, ৩ থেকে ৪ মাসের মধ্যে একেকটি চেম্বারে মাছ উৎপাদিত হয় ২২ থেকে ৩২ টন পর্যন্ত।

জেলা মৎস্য অফিস সূত্র জানায়, প্রায় প্রতিদিনই নতুন আইপিআরএস প্রযুক্তি সম্পর্কে জানতে লোকজন আসছেন।

নাটোরের জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ।

তিনি জানান, আধুনিক ও উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে অল্প খরচে অধিক পরিমাণ মাছ উৎপাদন সম্ভব।

এতে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও মাছ রপ্তানি করা যাবে।

প্রকল্পটি দেখতে আসেন রাজশাহী-২ আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা।

তিনি বলেন, আইপিআরএস পদ্ধতিতে মাছ চাষ দেখে তিনি আপ্লুত হয়েছেন।

তবে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সংযোগ থাকতে হয় এ পদ্ধতিতে মাছ চাষে।

তাই এই খাতে বিদ্যুতের খরচ কমানো দরকার এবং বিষয়টি তিনি সংসদে উপস্থাপন করবেন বলে জানান।

0 comments on “আইপিআরএস ব্যবহারে মাছ চাষ, দেখা দিচ্ছে নতুন সম্ভাবনা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *