Friday, 22 August, 2025

টবে পুঁইশাক চাষ পদ্ধতি


পুঁইশাক (English name: Malabar spinach) একটি জনপ্রিয় সবুজ শাক, যা বিভিন্ন পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এবং সহজে চাষযোগ্য। এটি মূলত গ্রীষ্মকালীন শাক হিসেবে পরিচিত, তবে এটি সারা বছরই চাষ করা সম্ভব। পুঁইশাক গাছের পরিচর্যা খুবই সহজ এবং এটি বিভিন্ন প্রকারের পরিবেশে বেড়ে ওঠে। বিশেষ করে যারা ছোট জায়গায়, যেমন বারান্দা বা ছাদে চাষ করতে চান, তারা টবের মধ্যে পুঁইশাক চাষ করতে পারেন।

গাছের পরিচর্যা

পুঁইশাক গাছ ভালো সূর্যালোক প্রয়োজন এবং রৌদ্রজ্জ্বল স্থানে ভালোভাবে বেড়ে ওঠে। মাটির পিএইচ ৬-৭ এর মধ্যে হওয়া উচিত। পুঁইশাক সাধারণত আর্দ্র, সেচযুক্ত মাটি পছন্দ করে, তবে অতিরিক্ত জল জমতে না দেওয়া উচিত। গাছের বৃদ্ধি রোধ করতে নিয়মিত চারা ছাঁটাই করা উচিত।

আরো পড়ুন
কুমড়ার ফলন বাড়ানোর কার্যকর উপায়

বাংলাদেশের গ্রামীণ ও শহুরে কৃষিতে কুমড়া একটি বহুল চাষকৃত ও জনপ্রিয় সবজি। সারা বছর চাষযোগ্য এই ফসলের পুষ্টিগুণ ও বাজারমূল্য Read more

বিলুপ্তপ্রায় দেশীয় মাছ রক্ষায় অভয়াশ্রম জরুরি: মৎস্য উপদেষ্টা

দেশের বিলুপ্তপ্রায় দেশীয় প্রজাতির মাছ চিহ্নিত করে সংরক্ষণের আহ্বান জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, বিভিন্ন Read more

টবে পুঁইশাক চাষ পদ্ধতি

১. টব নির্বাচন: বড় আকারের একটি টব নির্বাচন করুন, যাতে গাছের শিকড় যথেষ্ট জায়গা পায়। টবটির তলায় ভালো drainage hole থাকতে হবে, যাতে অতিরিক্ত পানি বেরিয়ে যেতে পারে।

২. মাটি প্রস্তুতি: টবের মধ্যে মাটি ভর্তি করার আগে, মাটির সাথে কম্পোস্ট বা ভাল সার মেশান। এভাবে মাটি সমৃদ্ধ হবে এবং পুঁইশাকের বৃদ্ধি উন্নত হবে।

৩. বীজ রোপণ: পুঁইশাকের বীজ গরম ও আর্দ্র পরিবেশে দ্রুত গড়ে ওঠে। টবের মধ্যে ২-৩ সেন্টিমিটার গভীরতা রেখে বীজ রোপণ করুন এবং হালকা পানি দিন।

৪. সেচ ও যত্ন: টবে নিয়মিত পানি দিতে হবে, তবে অতিরিক্ত পানি জমাতে হবে না। গাছের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে মাঝেমাঝে তরল সার ব্যবহার করা যেতে পারে।

রোগ ও প্রতিকার

পুঁইশাক চাষে কিছু সাধারণ রোগ ও বালাই হতে পারে, যেমন পঁচা রোগ (Root Rot), আধিক পোকামাকড় (Aphids), পাতা পোড়া রোগ (Leaf Spot), এবং ধোঁয়া বা মোল্ড (Powdery Mildew)। এগুলোর প্রতিকার হিসেবে মাটি অতিরিক্ত আর্দ্র না রাখা, পোকামাকড়ের জন্য নেচারাল পেস্টিসাইড (যেমন, নিম তেল) ব্যবহার করা, এবং আক্রান্ত পাতা ও অংশ ছেঁটে ফেলা উচিত। এছাড়া, গাছের প্রতি সপ্তাহে ছত্রাকনাশক স্প্রে করা এবং নিয়মিত সেচ ও সার প্রদান করলে রোগ-বালাই প্রতিরোধে সহায়ক হবে। সঠিক পরিচর্যা ও সচেতনতা পুঁইশাককে সুস্থ রাখবে।

লাভ

টবে পুঁইশাক চাষ অনেক লাভজনক হতে পারে। এটি দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং সংযোজনমূলক উপাদান হিসেবে পরিবারের প্রতিদিনের খাবারে ব্যবহার করা যায়। এছাড়া, পুঁইশাক চাষে জমি বা স্থান বেশি প্রয়োজন হয় না, তাই শহরাঞ্চলের মানুষদের জন্য এটি একটি আদর্শ চাষ। স্বাস্থ্যকর পুষ্টিগুণের কারণে পুঁইশাক গাছ থেকে তাজা শাক সংগ্রহ করা অনেক সুবিধাজনক।

0 comments on “টবে পুঁইশাক চাষ পদ্ধতি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আর্কাইভ