Sunday, 22 December, 2024

সর্বাধিক পঠিত

টবে গোলাপ ফুলের চাষ পদ্ধতি


গোলাপের জাত প্রধানত ৭টি। যথা-হাইব্রিড টি, হাইব্রিড পার্পেচুয়েল, পলিয়েন্থা, ফ্লোরিবান্ডা, মিনিয়েচার এবং প্লেমবার।

গোলাপ চাষের জন্য উর্বর দোআঁশ মাটির জমি নির্বাচন করা উত্তম। ছায়াবিহীন উঁচু জায়গা যেখানে জলাবদ্ধতা হয় না, এরূপ জমিতে গোলাপ ভালো জন্মে। নির্বাচিত জমি ৪-৫ টি আড়াআড়ি চাষ ও মই দিয়ে মাটি ঝুর ঝুরা ও সমতল করতে হবে। টবে গোলাপ চাষ করার জন্য একই রকম মাটি প্রয়োজন।

অতিরিক্ত গরম ও অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত ঊভয়ই গোলাপ ফুল চাষে বাধার সৃষ্টি করে।

আরো পড়ুন
বোম্বাই মরিচ (Capsicum annuum) চাষ পদ্ধতি
বোম্বাই মরিচ (Capsicum-annuum)

বোম্বাই মরিচ (Capsicum annuum) বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় সবজি। এটি ঝাল মরিচের একটি জাত যা উচ্চ ফলনশীল এবং স্বাদে ঝাল। সঠিক Read more

আগাম ফুলকপি চাষ পদ্ধতি
ফুলকপি

ফুলকপি চাষ বাংলাদেশে একটি জনপ্রিয় শীতকালীন সবজি চাষ। এর চাষ সহজ এবং এটি কৃষকের জন্য লাভজনক হতে পারে। এখানে নিনজা Read more

বীজ থেকে গোলাপের চারা তৈরি করা গেলেও চাষের জন্য প্রধানত কলমের চারাই ব্যবহার করা হয়। সাধারণত গুটি কলম, শাখা কলম (কাটিং), চোখ কলম (বাডিং) ইত্যাদি উপায়ে গোলাপের চারা প্রস্তুত করা যায়।

গোলাপ ফুলের রোপণ পদ্ধতি

দেশীয় গোলাপ ফুল কাটিং পদ্ধতিতে চারা উৎপাদন করে বেড সিস্টেমে লাগিয়ে নির্বাচিত জাতের সায়ন (যে ডাল দিয়ে কলম করা হয়) সংগ্রহ করে বিভিন্ন কলম (জোড় কলম, চোখ কলম ইত্যাদি) পদ্ধতিতে চারা উৎপাদন করা হয়। যে চারাটি উৎপন্ন হলো, তার গোড়ায় মাটির বল তৈরী করে নির্দিষ্ট জমিতে  লাগানো হয়।

চারাটি লাগাতে সাধারণত: ২০ থেকে ৩০ সেমি (৮ থেকে ১২ ইঞ্চি) আয়তনের এবং ২৫ থেকে ৩০ সেমি (১০ থেকে ১২ ইঞ্চি) গর্ত তৈরী করে , তার ভিতর ভালোভাবে বসাতে হয় এবং গর্তটি মাটি দিয়ে ভালোভাবে আটকাতে হবে।

যে গাছ দ্রুত বাড়ে তার জন্য ২ ফুট (গাছ থেকে গাছ) এবং ৩ ফুট (সারি থেকে সারির) দূরত্ব বজায় রাখতে হয়। কলমের নীচের অংশ হতে কোন ডালপালা হতে দেওয়া যাবেনা।

টবে ফুল গাছের পরিচর্যা নিয়ে বিস্তারিত

গাছ ছাঁটাই

নতুন শাখা ভালোভাবে বিস্তৃত করার জন্য পুরনো ডাল, ক্ষত ও রোগাক্রান্ত ডাল কেটে বাদ দিতে হয়। বড় গোলাপ পেতে হলে গাছ নিয়মিত ছাঁটাই করতে হয়। আশ্বিন মাসকে গাছ ছাঁটাইয়ের উপযুক্ত সময় ধরা হয়।

Rose Flower

গোলাপ ফুলের গাছে সার প্রয়োগ

গাছ ছাঁটাইয়ের ১০-১২ দিন আগে সার প্রয়োগ করতে হবে। গাছ প্রতি ২-৩ কেজি পঁচা শুকনো গোবরের সঙ্গে ৫০ গ্রাম টিএসপি ও ৫০ গ্রাম পটাশ দিতে হবে। টবের উপর থেকে ১০ সেন্টিমিটার মাটি সরিয়ে নিচের মাটি কিছুটা আলগা করে সারগুলো মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিতে হবে। এসময় খেয়াল রাখতে হবে যাতে শিকড়ের কোন ক্ষতি না হয়। হাঁস-মুরগি বা কবুতরের বিষ্ঠা সার হিসেবে গোলাপ গাছে দেওয়া যেতে পারে।

গোলাপ গাছের পরিচর্যা

১. চারার জোড়া জায়গাটির নিচে কোন প্রকার ডালপালা বের হলে ধারালো ছুরি দিয়ে কেটে দিন।
২. বড় আকারে ফুল পেতে হলে প্রথম দিকে বের হওয়া পুষ্পকুড়ি ভেঙে দিন।
৩. মার্চ-এপ্রিল মাসে পঁচা গোবর এবং কম্পোস্টের মালচ গাছের গোড়ায় দিন।
৪. পুরান ডালে ফুল ভালো হয় না। তাই ডালপালা ছাঁটাই করতে হবে।
৫. ছাঁটাইকৃত ডালের সামনে ছত্রাকনাশক ঘন করে গুলে লাগিয়ে দিন।
৬. গাছের গোড়া থেকে ২০ সেন্টিমিটার দূরে গোল করে মাটি খুঁড়ে শেকড় বের করে দিন।
৭. ক্ষতিকর পোকামাকড় ধ্বংস করতে এভাবে মাটি খুঁড়ে ৮-১০ দিন রাখতে পারেন।

গোলাপ ফুলের প্রক্রিয়াজাতকরণ

৪০০ পিপিএম হাইড্রক্সি কুইনোলিন সাইট্রেট এর সাথে ৪% চিনির দ্রবণ মিশিয়ে তা কুঁড়ির উপর স্প্রে করতে হবে। কুঁড়িকে পলিথিন মোড়কে মুড়ে কার্টুনে রাখতে হবে। এভাবে কার্টুনটি ৪ থেকে ১০০ সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় তিন দিন সংরক্ষণ বা পরিবহন করা যাবে।

গোলাপ ফুল সংরক্ষণ করতে ৩.২৮ ফুট লম্বা ১৩ ইঞ্চি প্রশসত্ম ২.৫ ইঞ্চি উঁচু বক্স তৈরী করতে হবে। এই বক্সে ২৬ থেকে ২৮ ইঞ্চি লম্বা কান্ড বিশিষ্ট ৮০ টি গোলাপ রাখা সম্ভব।

বক্সের ফাঁকে ফাঁকে পলিথিন ও পানি শোষক কাগজ রাখতে হবে। ২০টা কুঁড়ি নিয়ে একটা আঁটি রাবার ব্যান্ড দিয়ে এমনভাবে বাধঁতে হবে যেন কুড়ির কোন ক্ষতি না হয়। প্রতিটি বান্ডেলের উপরি ভাগ মোড়ক কাগজ দিয়ে বেঁধে সংযুক্ত ফিতা দিয়ে আটকাতে হবে।

0 comments on “টবে গোলাপ ফুলের চাষ পদ্ধতি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *